Islam

আইয়ামে বীজের রোজা ডিসেম্বর ২০২৪ (কখন ও কয়টি) নিয়ম জানুন!

আইয়ামে বীজের রোজা ডিসেম্বর 2024 (কখন ও কয়টি) নিয়ম জানুন!

আইয়ামে বীজের রোজা ডিসেম্বর ২০২৪ (কখন ও কয়টি) নিয়ম জানুন! গুরুত্ব ও ফজিলত। আপনি আমি চাইলেও সারা বছর রোজা করতে পারবো না, আবার রাখতে পারলেও সেটা উচিদ নয়। কারণ আমাদের শরীরের, স্ত্রীর এবং আত্মীয়দের একটি রয়েছে আমাদের প্রত্যেকের উপর, যা পালন করা প্রয়োজনীয়। কিন্তু আপনি সেটা সঠিক ভাবে করতে পারবেন না, যদি প্রতিদিন নিয়মিত রোজা করেন। তবে আপনি চাইলে সহজেই সারা মাস এবং একই সাথে সাথে সারা বছর রোজা তথা সিয়াম রাখার সওয়াব পেতে পারেন। আর সেটি হল আইয়ামে বীজের রোজা বা সাওম পালনের মধ্য দিয়ে। হাদিসে এসেছে আইয়ামে বীজের রোজা রাখার গুরুত্ব ও ফজিলত অপরিসীম, আসুন জানি বিধান ও মাসআলা।

আইয়ামে বীজের রোজা ডিসেম্বর ২০২৪

হিজরি ১৪৪৬ সনের আরবি জমাদিউস সানি মাস এখন চলমান, যা ইংরেজি ডিসেম্বর মাসের ৩ তারিখ হতে শুরু হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় ১৪৪৬ হিজরি সনের জমাদিউস সানি মাসের ১৩ তারিখ হবে আগামী রবিবার (১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪)। এতে করে কেউ যদি আইয়ামে বিজের রোজা রাখতে চায় তাহলে তাকে রবিবার দিবাগত রাতে সেহরি খেতে হবে এবং রোজার নিয়ত করতে হবে। এভাবে ১৬, ১৭ ও ১৮ ডিসেম্বর, সোম-মঙ্গল-বুধবার রোজা রাখলে এই মাসের আইয়ামে বীজের রোজা রাখার ফজিলত অর্জিত হবে ইনশাআল্লাহ।

আইয়ামে বিজের রোজা কখন রাখতে হয় ও কয়টি নিয়ম জানুন!

ইসলাম ধর্মে রোজা বা সিয়ামের বিধান রয়েছে এতে যুক্ত রয়েছে রমজানের ফরজ রোজা এবং রয়েছে আরও বিভিন্ন নফল রোজা সমূহ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ও উত্তম একটি নফল রোজা হল আইয়ামে বিজের রোজা। আমাদের মাঝে অনেকেই রয়েছে যারা গুরুত্বপূর্ণ ও নেয়ামতে ভরা আইয়ামে বিজের রোজা গুলো রাখতে চায়, যার কারণেই জানা আবশ্যিক আইয়ামে বিজের রোজা কয়টি বং কখন রাখতে হয়। আইয়ামে বিজের রোজা মোট ৩টি, যা প্রতি চন্দ্র মাসের দিনগুলো বিশেষ তিনটি দিনে রাখতে হয়, দিন গুলো হলো আইয়ামুল বিজ তথা প্রতি আরবি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫তম দিন বা তারিখ। আইয়ামে বিজের রোজা রাখা একটি মুস্তাহাব ইবাদাত। নবীজি হযরত মুহাম্মাদ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো এ রোজাগুলো ছাড়তেন না। তিনি সব সময় আইয়ামে বিজের রোজা রাখতেন। এমনকি সফরেও। তবে রোজাগুলো ফজিলতপূর্ণ হলেও তিনি উম্মতের জন্য এ রোজাকে বাধ্যতামূলক করেননি।

আইয়ামে বীজের রোজা রাখার গুরুত্ব ও ফজিলত

হাদিসের আলোকে আইয়ামে বীজের রোজা রাখার গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক, যার ফলে সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব হাসিল করা যায়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস রাদিয়াল্লাহু আন প্রতিদিন রোজা রাখতেন। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে প্রতিদিন রোজা রাখতে নিষেধ করেন এবং উপদেশ দেন এভাবে-

‘হে আবদুল্লাহ! আমি এ সংবাদ পেয়েছি যে, তুমি প্রতিদিন রোজা রাখো এবং সারা রাত নামাজ আদায় করে থাক। আমি বললাম, ঠিক (শুনেছেন) হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেন- এরূপ করবে না (বরং মাঝে মাঝে) রোজা রাখো আবার ছেড়েও দাও। (রাতে) নামাজ আদায় করো আবার ঘুমাও। কেননা তোমার উপর তোমার শরীরের হাক রয়েছে, তোমার চোখের হাক রয়েছে, তোমার উপর তোমার স্ত্রীর হাক আছে, তোমার মেহমানের হাক আছে। (বরং) তোমার জন্য যথেষ্ট যে, তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন রোজা রাখবে। কেননা নেক আমলের বদলে তোমার জন্য রয়েছে দশগুণ নেকি। এভাবে সারা বছরের রোজা পালন হয়ে যায়।’ (বুখারি) আইয়ামে বিজের রোজা সম্পর্কে আরও বর্ণিত হয়েছে যে-

হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালাম বেহেশতের নিষিদ্ধ ফল খাওয়ার পর তাদের শরীর থেকে জান্নাতি পোশাক চলে যায়। আর তাদের শরীরের রংও কুৎসিত হয়ে যায়। এরপর হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালাম আল্লাহর হুকুমে চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ এবং ১৫ তারিখে রোজা রাখলে আবার তাদের শরীরের রং পূর্বের ন্যায় উজ্জ্বল হয়ে যায়। তাই এই তিন দিনকে আইয়্যামে বিজ বা উজ্জ্বলতার দিন বলা হয়।

আজকে আরবি মাসের কত তারিখ ২০২৪ | Hijri Date Today Bangladesh

আইয়ামে বীজের রোজা রাখার হাদিস

মহান আল্লাহ্‌ মনোনীত ইসলাম একমাত্র ধর্ম যা একই সাথে শান্তি পূর্ণ এবং সম্পন্ন ধর্ম। কুরআন ও হাদিসের মাধ্যমে ইসলামের সকল বিধান ও মাসাআলা বর্ণনা করা হয়েছে। তারই ভিত্তিতে এ অংশে তুলে ধরা হল আইয়ামে বীজের রোজা রাখার হাদিস সমূহ;

ইবনু মিলহান আল-ক্বায়সী (রহঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আইয়ামে বীয অর্থৎ চাঁদের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে সওম পালনে আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এগুলো সারা বছর সওম রাখার সমতুল্য। – – আবু দাউদ ২৪৪৯, হাদীসের মানঃ সহীহ

আইয়ামে বীজের রোজার গুরুত্ব ও ফজিলতঃ হাদীস ২

জারীর ইবন আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করা সারা জীবন সাওম (রোযা) পালন করার সমতুল্য। আর আইয়ামে বীয -তের তারিখের সকাল থেকে চোদ্দ এবং পনের তারিখ পর্যন্ত। – নাসায়ী ২৪২০, হাদীসের মানঃ

হাসান আইয়ামে বীজের রোজার গুরুত্ব ফজিলতঃ হাদীস ৩

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমার বন্ধু (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তিনটি বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতি মাসে তিন দিন করে সওম পালন করা এবং দুই রাকাত সালাতুদ দুহা এবং ঘুমানোর পূর্বে বিতর সালাত আদায় করা। – বুখারী ১৯৮১, হাদীসের মানঃ সহীহ প্রতি মাসে ৩ টি রোজার গুরুত্বঃ হাদীস ৪ ‘আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি মাসের প্রথম দিকে তিনদিন সওম পালন করতেন। – আবু দাউদ ২৪৫০, হাদীসের মানঃ হাসান

kareem

Kareen writes engaging content for Ramadancalendarz.com, combining passion for writing with knowledge of Islamic traditions, aiming to inform and inspire during the holy month.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button